পরী (পর্ব - ৩)


 তোমার চিন্তার কিছুই নেই,,যেই আমাদের বাড়ির দিকে তাকাবে তার এমনটা মনে হবে অনেক আগে থেকে এই বাড়ি এখানে আছে,,কারন আমাদের বাড়িটা মায়া করে রাখা আছে

আমিঃআচ্ছা তাহলে তো আর কোনো সমস্যা নেই..
জিনিয়াঃহুমম তেমন কোনো সমস্যা নেই তবে একটা বিষয় আমাদের আসল পরিচয় কিন্ত্ একমাত্র তুমি জানো..তুমি ছাড়া আর কেও জানে না,ভুলেও আমাদের আসল পরিচয় কাওকে দিবে না,
আমিঃআরে পাগল নাকি আমি কেনো তোমাদের পরিচয় অন্য কাওকে দিতে যাবো..
জিনিয়াঃবলা তো যায় না কৈতুহলী হয়ে হয়তো দিয়ে দিতে পারো
আর কাল থেকে আর রাতে দেখা করতে পারবো না,,কারনন আমাদের শক্তি অনেক টাই কমে যাবে
আমি;কেনো তোমাদের শক্তি কেনো কমে যাবে?
জিনিয়াঃকারণ আমরা দিনের বেলাতে পৃথিবীতে অবস্থান করবো যার ফলে শক্তি কমে যাবে,,আমাদের আলো সহ্য হয় না
আমিঃআলো সহ্য না হলে তোমাদের গায়ে এতো আলো কেনো?
জিনিয়াঃআরে আমাদের গায়ে আলো বলেই তো আলো সহ্য করতে পারিনা
আজ আমি যাই কালকে সকালে দেখা করবো
জিনিয়া চলে গেলো আমিও ঘুমিয়ে গেলাম..
ওদের শক্তি নিয়ে আমার ভয় লাগছে,,আমি যদি ওদের সাথে বা যাই তাহলে তো ওদের যা শক্তি তা প্রয়োগ করেই আমাকে নিয়ে যেতে পারবে..
কিন্তু সব কিছুরই দূর্বলতা আছে আমাকে আগে ওদের দুর্বল যায়গা খুজে বের করতে হবে তারপর আমি দেখাবো আমার খেলা...
আমি ঘুমিয়ে গেলাম
পরদিন সকালে আম্মুর ডাকে ঘুম ভাঙল
আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিলাম
জিনিয়ার ব্যাপার আমার মাথাতেই ছিলো না।
বাসা থেকে বের হয়ে একটু সামনে গেছি তখনি মনে হলো আরে এখানে তো এই বাসা ছিলো না তাহলে এইই বাসা আসলো কই থেকে?
অহহ জিনিয়া তো বলেছিলো ওর পিতা মাতা জাদু বল প্রয়োগ করে এই বাড়িটা করেছে
কিন্তু জিনিয়া এই কথাও বলেছিলো যে মনে হবে এই বাসা অনেক আগে থেকেই এখানে আছে,,তাহলে আমার কেনো এমন মনে হচ্ছে না
তাহলে কি ওদের জাদু
কাজ করছে না,,কাজ না করলে তো মহা ঝামেলা হয়ে যাবে..এমন সময় কেও একজন আসলো
কি ব্যাপার অমন করে কি দেখছ?
আমিঃআমি কি দেখছি সেটা পরে বলবো আগে বলুন আপনি কে?আগে তো কখনো এইই এলাকাতে দেখিনি..
আরে আমাকে চিনতে পারলে না,,আমি পরী মানে আমার নাম জিনিয়া।।
আমি;জিনিয়া তুমি?কিন্তু তুমি রূপ বদল করেছ কেনো?
জিনিয়াঃআরে আমার অই রূপে থাকলে যে দেখবে সেই পাগল হয়ে যাবে..
আমিঃকই আমি তো দেখেছি আমি পাগল হয়েছি নাকি?
জিনিয়াঃকারন তুমি আমার বর হবে তাই পাগল হওনি
আমিঃজিনিয়া একটা সত্যি কথা বলবো?
জিনিয়াঃহ্যা বলো?
আমিঃতোমাকে না এই রুপে আগের থেকে বেশি মায়াবি লাগছে..
জিনিয়াঃসত্যি বলছ তুমি?
আমিঃহ্যা সত্যি বলছি
জিনিয়াঃআমি ভুল কাওকে বেছে নেইনি,,একদম ঠিক কাওকেই পেয়েছি যে কিনা আমার রূপকে মূল্যায়ন করে না,,আজ নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবতী মনে হচ্ছে
আমিঃআচ্ছা তুমি তো বলেছিলে যেই এই বাসার দিকে তাকাবে তার মনে হবে অনেক আগে থেকে এই বাসা আছে কিন্তু আমার তো তেমন কিছুই মনে হয় না
জিনিয়াঃসত্যি তোমার মনে হয় না,,
আমিঃনা সত্যি আমার তেমন কিছুই মনে হয় না
জিনিয়াঃতাহলে তুমি এক কাজ করে দুই চারজনকে জিজ্ঞাস করে দেখো তাড়া কি বলে
আমিঃআচ্ছা তোমারর সামনেই জিজ্ঞাস করছি
একজন লোক আসছে তাকে ডেকে জিজ্ঞাস করলাম
এই ভাই আপনি কি জানেন এই বাড়ি কবে থেকে
আছে
লোকঃকবে থেকে আছে তা তো জানিনা তবে আমি গত ৮মাস ধরে এখানে এসেছি আর যবে থেকে এসেছি তবে থেকেই এই বাড়ি আমি এখানে দেখে আসছি
বলেই লোকটা চলে গেলো।।
আমিঃধুর এই ব্যাটা মনে হয় নতুন তাই এমন বলছে
আরো একজনকে ডাক দিলাম সে আসলো...
আমিঃভাই এই বাড়িটা কবে থেকে দেখছেনন
আরে ভাই গত দশ বছর ধরে এই বাড়ি দেখছি
বাড়িটা অনেক সুন্দর
জিনিয়া কিছু বলছে না শুধু মিটিমিটি হাসছে..
আমিঃএই মজা নিও না এইবার আরো একজনে জিজ্ঞাস করবো আরেকটা লোক আসছিলো তাকে ডেকে নিলাম...
তাকেও একই কথা জিজ্ঞাসস করলাম
তার উত্তর শুনে তো আমি অবাক
সে উত্তর দিলো এই বাড়ি নাকি তার দাদার আমল থেকে দেখে আসছে বলেই লোকটা চলে গেলো./
আমিঃআরে এইসব হচ্ছে কি?
জিনিয়াঃএই সব কিছুই মায়া শক্তির প্রভাব
আমিঃতাহলে আমার উপর কেনো মায়া শক্তি কাজ করছে না?
জিনিয়াঃকারণ তুমি সব সত্যি জানো তাই তোমার উপর কাজ করছে না,,
আমিঃআচ্ছা আমি অফিস যাচ্ছি লেট হয়ে যাচ্ছে
জিনিয়াঃএই তুমি অফিস করে আর কি করবে কয়েকদিনপর তো আমাদের সাথেই চলে যাবে..
আমিঃহ্যা কিন্ত্য প্লিজ আমাকে আর মনে করে দিও না আমি কয়েকদিন পর তোমাদের সাথে চলে যাবো,,কথাটা মনে হলে আমার অনেক কষ্ট হয়
জিনিয়াঃআচ্ছা বাবা সরি আমার ভুল হয়ে গেছে
আমিঃআরে তুমি ইংরেজি বলতে পারো
জিনিয়াঃআমি সব ভাষাতেই কথা বলতে পারি আচ্ছা যাও তুমি সাবধানে যাবে..
আমি চলে আসলাম এতো রহস্য কিভাবে এর থেকে বের হবো আমি নিজেও জানিনা..
অফিসে এসে নিজের কাজ করতে লাগলাম
তখন আমার ফোন কল আসলো
কিন্তু ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে আমি কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম
কোনো নাম্বার নেই,,কিন্তু লেখা আছে পরী
আমি ফোন রিছিভ করলাম
আরে তুমি এতো ভয় পাও কেনো বলতো..একটু সাহস রাখতে হবে তো নাকি?
আমি ভয় পেয়েছি তুমি সেটা বুঝলে কিভাবে?
জিনিয়াঃতোমার শরীরের প্রত্যেক মুহুতে কি হচ্ছে না হচ্ছে তার সব কিছুই আমি অনুভব করতে পারি
আমি এটাও বলতে পারি তুমি অফিসে যাবার পর থেকে বারবার আমার মুখটাই মনে করেছ আর আমার কথা ভেবেছ,,
আমি এইবার ভয় পেয়ে গেলাম আমার মনের সব খবর পেয়ে গেলে জিনিয়া তো এটাও জানে আমি ওদের কাছ থেকে মুক্তি চাচ্ছি
জিনিয়াঃকি হলো তুমি চুপ হয়ে গেলে কেনো?
আমিঃনা তেমন কিছু না,,
জিনিয়াঃআচ্ছা তোমার কাজ শেষ তুমি তোমার বসকে কাজ গুলো বুঝিয়ে দিয়ে বাসায় চলে আসো./
আমিঃআরে আমার কাজ কিভাবে শেষ
হবে আমি তো মাত্র কাজ করা শুরু করলাম
জিনিয়াঃএকবার সামনে তাকিয়ে দেখো..
আমি সামনে তাকিয়ে দেখি সত্যি সব ফাইল গুলো গোছানো আমি খুলে দেখলাম সত্যি সব কাজ শেষ
জিনিয়াঃকি হলো বিশ্বাস হলো তো..
আমিঃহুম হয়েছে,,,
জিনিয়াঃযাও এইগুলো দিয়ে আসো তারপর আমাদের বাসায় আসবা আজকে তোমাকে আমার পিতা মাতার সাথে পরিচয়য় করিয়ে দিবো তারপর তোমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হবো
আমি বসকে সব গুলো ফাইল দিয়ে জিনিয়াদের বাসায় চলে গেলাম..
ওর আব্বু আম্মুর সাথে দেখা করিয়ে দিলো..
তাড়াও অনেক ভালো..
তারপর দুজন মিলে ঘুরতে বের হলাম
দিন গুলো যেতে লাগলো./
ওর পরিবারের সাথে আমার অনেক ভালো সম্পর্ক হয়ে গেছে যদিও এই ব্যাপারে আমার আব্বু আম্মু কিছুই জানে না..
আমি যখন তখন জিনিয়াদের বাসায় চলে যায়..
তেমনি একদিন অফিসের কাজ শেরে আমি ওদের বাসায় গেলাম জিনিয়ার রুমে যেতে আমার কোনো বাধা নেই কারন দুদিন পর আমি জিনিয়ার স্বামী হবো..
দরজায় নক না করেই রুমের মধ্যে প্রবেশ করে গেলাম..
জিনিয়া তখন ছিলো একদম কমু না যাও
দেখেই তো আমি হা জিনিয়াও আমাকে দেখে দৌড়ে আবার ওয়াশরুমে চলে গেলো./
তারপর গিয়ে বললো
এই আমার কাপড় গুলো দিয়ে যাও
আমি দিয়ে আসলাম
জিনিয়া সেই গুলো পড়ে বের হলো....
তবে জিনিয়াকে দেখে মনে হচ্ছে আমার উপর অনেক রেগে আছে,,কিন্তু রেগে কেনো থাকবে আমি কি দোষ করেছি,,
আমিঃকি হলো তুমি এতো রেগে আছ কেনো?
জিনিয়াঃজানো তুমি আমার কতবড় ক্ষতি করে দিলে?
আমিঃকেনো আমি আবার তোমার কি ক্ষতি করলাম?
জিনিয়াঃতুমি আমাকে যেই অবস্থায় দেখলে এই কারণে আজ থেকে ৩ আমাবস্যা আমার কোনো শক্তি থাকবে না,,একজন সাধারণ মানুষের মত জীবনযাপন করতে হবে..
আমিঃতাহলে তো ভালোই হলো..
জিনিয়াঃকি ভালো হয়েছে?
আমিঃবারে আমি তো তোমার সাথে পরীলোকে যাবো তারপরর সেখানে যাবার পরর আমাকে তোমাদের মত বানিয়ে নিবে,,আমি অমনভাবে থাকতে পাড়লে তুমি কেনো আমাদের মত সাধারন মানুষ হয়ে থাকতে পাড়বে না,,
জিনিয়াঃকিন্তু এই ৩ আমাবস্যাইই আমার জীবনে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় তুমি বুঝতে পাড়ছ না,,
আমার এতোদিনের তপস্যা সব নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে
আমিঃতপস্যা মানে কিসের তপস্যা?
চলবে.......


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মেঘে_ঢাকা_আকাশ - ০১

মেঘে_ঢাকা_আকাশ - ০২

মেঘে_ঢাকা_আকাশ - ০৩