পরী (পর্ব - ৪)
আমার এতোদিনের সকল তপস্যা শেষ হয়ে যেতে বসেছে..জিনিয়া
আমিঃতপস্যা মানে ঠিক বুঝলাম না..
জিনিয়াঃতোমার আর বুঝে কাজ নেই যা করার তা তো করেই দিলে
আমি;এতো রেগে যাচ্ছা কেনো মাত্র তো ৩আমাবস্যা তারপর তো আবার সেই আগের রুপ ফিরে পাবে
জিনিয়াঃকিন্তু আমি এই ৩আমাবস্যা করবো কি?
আমিঃআমার সাথে ঘুরবে ডেটিং এ যাবে
জিনিয়াঃবয়েই গেছে তোমার সাথে কোথাও যেতে
আমি;না গেলে নাই কাল যাচ্ছি ঘুরতে তুমি তো জানতে পারবে না কোথায় যাবো কি করবো..
জিনিয়াঃআমিও যাবো
আমিঃতুমি না মাত্র বললে তোমার ঘুরতে যাবার কোনো ইচ্ছা নেই..
জিনিয়াঃআরে বুঝো না আমি রাগ করে বলেছি
কাল কখন যাবে
আমিঃযাবো বিকালের দিকে
জিনিয়াঃআচ্ছা আমি সময় মতো প্রস্তুত হয়ে নিবো যাও এইবার তুমি তোমার বাসায় চলে যাও
আমি জিনিয়াকে বিদায় দিয়ে বাসায় চলে আসলাম
কিন্তু মনের ভেতর একটা খটকা থেকেই যাচ্ছে জিনিয়া কিসের তপস্যার কথা বললো আর আমার থেকেই লুকালো কেনো?
নাহ হয়তো ওর পারসোনাল কোনো ব্যাপার আমাকে হয়তো বলতে চায়নি তাই বলেনি এই নিয়ে রাজনীতি করার কিছু নেই
আমি বাসায় আসার পর আম্মু আমাকে জিজ্ঞাস করলো
এই মামুন তুই যে সমস্যার কথা বলছিলো সেই সমস্যা কি তোর এখনো আছে?
আমিঃনাহ আম্মু আমি ঠিক আছি তোমার চিন্তা করতে হবে না,,আম্মুকে কিছুই বলা যাবে না বললে আম্মু কি না কি করবে তার চেয়ে নিজের মধ্যেই রাখবো
পরদিন আবার জিনিয়াদের বাসার আমি যখনি ওদের বাসায় যায় ওর আব্বু আম্মু ঘুমে থাকে বুঝিনা এনারা এতো ঘুমায় কিভাবে..
আমি জিনিয়ার রুমে প্রবেশ করতেই দেখলাম জিনিয়া শুয়ে আছে..
আমিঃকি ব্যাপার তুমি এখনো রেডি হওনি আমি আরো ভাবলাম আমি হয়তো লেট করে ফেলেছি
জিনিয়াঃআরে আমার রেডি হতে কি অনেক সময় লাগবে নাকি তুড়ি মেরে রেডি হয়ে যাচ্ছি দেখো এই বলে জিনিয়া কি জানি আবৃত করতে লাগলো কিন্তু নাহ কোনো কাজ হলো না,,
জিনিয়াঃকি ব্যাপার আমার শক্তি কাজ করছে না কেনো?
আমিঃতুমি না কাল বললে আগামী ৩আমাবস্যা তোমার শক্তি কোনো কাজে আসবে না..
জিনিয়াঃঅহ হ্যা আমি তো ভুলেই গেছিলাম
আমি এখন তোমার মতই একজন সাধারণ মানুষ
আমিঃতাহলে এখন কি করবা?
জিনিয়াঃকি আর করার ১ঘন্টা সময় দাও আমি রেডি হয়ে আসছি
তাহলে আমি আগামী ১ঘন্টা কি করবো?
জিনিয়াঃকি আর করবে শুয়ে থাকো
আমি যাচ্ছি জিনিয়া ওয়াশরুমে চলে গেলো..
আমি পুরো রুমটা ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম
অনেক সুন্দর রুম
হঠাৎ আমার নজর গেলো একটা বইয়ের দিকে
বইয়ের উপর কি ভাষায় জেনো কি লেখা ছিলো কিছুই বুঝলাম না..
খুলে দেখলাম ভেতরে বাংলাতেই আছে
আমি পৃষ্টা উল্টোতে লাগলাম
কিছুদূর যাবার পরর একটা পৃষ্টায় আমার নজর আটকিয়ে গেলো..
লেখা ছিলো রাজকুমারীর সিংহাসন প্রাপ্তি ও ক্ষমতা অর্জন
আমি কৌতুহল বশত পড়তে আরম্ভ করলাম
কিছুটা পড়তেই
যা দেখলাম ভয়ে আমার হাত পা কাঁপছে
রাজকুমারীর শক্তি বৃদ্ধি করতে দরকার হবে এমন দশজন ছেলের যারা কিনা কোনো প্রকার বাধা ছাড়া বিশেষ রক্তজবা ফুল ছিঁড়ে আনতে পাড়বে
প্রতি ৬আমাবস্যা পর পর রাজকুমারীর অই বিশেষ করে ছেলের রক্ত দিয়ে গোসল করতে হবে
আর পরীলোকের বিশেষ স্থানে ছেলেটার দেহ পুতে রাখতে হবে তার থেকে একটা গাছ হবে
দশটা গাছে যখন একত্রে ফল আসা শুরু হয়ে তখন রাজকুমারী তার ক্ষমতা পাবে আর সে হবে সবচেয়ে বেশি শক্তির অধিকারী
নাহ আমি আর পড়তে পাড়ছি না,,
তাহলে জিনিয়া আমার সাথে এই সব কিছু করছে ওর নিজের স্বার্থের জন্য..
আর আমার দিন তাহলে শেষ হয়ে এসেছে এই জন্যই কি জিনিয়া তপস্যা কথা বলছিলো জিনিয়া কি এই তপস্যা করে আসছিলো
আমি বই হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি তখনি জিনিয়া বের হয়ে এসে আমার হাত থেকে ছোঁ মেরে বইটা নিয়ে নিলো
আমি এমন একটা ভাব নিলাম যেনো আমি কিছুই জানিনা
জিনিয়াঃএই তোমার হাতে এই বই কেনো
আর তুমি কি এই বই থেকে কিছু পড়েছ?
আমিঃনাহ আমি তো মাত্র বইটা হাতে নিলাম
জিনিয়াঃঅহ বাচা গেলো?
আমিঃতুমি কি কিছু বললে?
জিনিয়াঃনা আমি আবার কি বলবো..আচ্ছা আমি শাড়ি পড়বো আর তাতে তুমি আমাকে সাহায্য করবে..
জিনিয়ার উপর আমার প্রচুর রাগ হচ্ছে...
মন চাচ্ছে খুন করে ফেলি কিন্তু জিনিয়াকে খুন করলে ওর আব্বু আম্মুকে আমাকে ছাড়বে না,
তবে জিনিয়া আমার সাথে যে খেলা শুরু করেছে তার শেষ করবো আমি,,আমার যে করেই হোকক এই বইয়ের পুরোটা পড়তে হবে,,তাহলেই আমি পেয়ে যাবো ওদের দূর্বল কোনো যায়গা আছে কিনা
জিনিয়াঃকি হলো তুমি সেই তখন থেকে এতো কি ভাবছ?
আমিঃনা তেমন কিছু না,ভাবছি তোমাকে কোন শাড়িতে বেশি ভালো লাগবে..
জিনিয়াঃকেনো তোমার না নীল রঙ পছন্দ
আমিঃতুমি জানলে কিভাবে অবাক হয়ে
জিনিয়াঃউফফ তুমি কেনো বারবার ভুলে যাও বলতো আমি পরী আর আমি সবই জানি
আমিঃকিন্তু তুমি তো আমার মতন একটা সাধারণ মানুষ
জিনিয়াঃকিন্ত্ আগে তো ছিলাম যাই হোক আমি শাড়ি নিয়ে আসছি তুমি আমাকে পড়তে সাহায্য করবে
জিনিয়া শাড়ী নিয়ে চলে আসছে
ও নিজেই জড়িয়ে নিলো আমি জাস্ট একটু ঠিক করে দিলাম
তারপর দুজন মিলে বের হয়ে গেলাম..
কিছুদূর যেতেই একটা ফুসকার দোকান
জিনিয়াঃএই আমি অই গুলা খাবো.
আমি;কোন গুলো
জিনিয়াঃঅই যে অই মেয়ে গুলো খাচ্ছে সেই গুলো
আমিঃফুসকা খাবে তুমি?
জিনিয়াঃহ্যা মনে পড়েছে ফুসকা খাবো অনেক ঝাল দিয়ে শুনেছি ঝাল দিয়ে খেতে নাকি অনেক মজা
আমিঃআচ্ছা চলো
ফুসকা দিতে বললাম এক প্লেট অনেক ঝাল দিয়ে
জিনিয়া খাচ্ছে
আর আমি দেখছে
আমিঃঅনেক মজা লাগছে
জিনিয়া কিছু বলছে না রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে,,
ঝাল দিয়ে আরো এক প্লেট দিতে বলবো
জিনিয়া তবুও কিছু বলছে না
পানি খেয়ে উঠে হাটা ধরলো আমি বিল দিয়ে ওর পেছনে পেছনে হাটা ধরলাম
আমিঃকি হলো অনেক মজা লাগছে?
জিনিয়াঃচুপ কোনো কথা বলবে না,
তুমি জানতে ঝাল খেলে মানুষের কষ্ট হয় তবুও আমাকে বললে না কেনো?
আমিঃতোমার ইচ্ছা পূরণ করে দিলাম,,মনে মনে বলি তোকে কিভাবে মাড়বো আমি সেই বুদ্ধি বের করছি মাত্র শুরু আমার রক্ত দিয়ে গোসল করবি তুই তাই না
জিনিয়াঃতুমি কি কিছু বললে?
আমিঃনা কিছু না,সেদিন ঘুরে বাসায় চলে আসছি এখন এই কাজে শুধু আমাকে আম্মু সাহায্য করতে পারবে আমি আম্মুকে সব বললাম প্রথমে একটু ঘাবড়ে গেলেও পরে আমার নিজেকে সামলে নিতে পেড়েছে.
পরদিন প্লান মোতাবেক আমি জিনিয়ার বাসায় গেলাম..
এই জানো আম্মু তোমাকে দেখতে চেয়েছে..
জিনিয়াঃমানে কি তুমি আমার ব্যাপারে আম্মুকে সব বলে দিয়েছ
আমিঃহুম তবে আসল পরিচয় দেইনি,,,
আর শোন আম্মু বলেছে তোমাকে আজ নিয়ে যেতে তোমার হাতে নাকি রান্না খাবে
জিনিয়াঃআমি রান্না করতে পারিনা
আমিঃকেনো আগে না কি সুস্বাদ খাবার আমাকে খাওয়াতে
জিনিয়াঃসব কিছু জাদু শক্তিতে নিয়ে আসতাম./
আমিঃএই প্লিজ না করো না,,তেমন হলে আমি আম্মুকে বলে দিবো তোমাকে জেনো সব শিখিয়ে দেয়
অনেক বুঝিয়ে সুজিয়ে জিনিয়াকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসলাম
আম্মুর হাতে জিনিয়াকে তুলে দিয়ে আমি বাসা থেকে আবার বের হয়ে গেলাম জিনিয়াদের বাসায় আমি আবার গেলাম
তারপর অই বইটা খুঁজে আমি সব গুলো পৃষ্টার ছবি তুলে নিলাম
এরপর যায়গার জিনিস যায়গায় রেখে বাসায় চলে আসলাম..
এরপর আমি পড়তে শুরু করলাম
কয়েকদিন লেগে গেলো সবটা পড়তে
আমার যা দরকার আমি তা পেয়েও গেলাম
জিনিয়া আর ওর পরী রূপ ফিরে পাবে না
কিন্তু তার জন্য কঠিন একটা কাজ আছে
যদি কোনো মানুষ ওর সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে আর তার ফলে যদি জিনিয়া অন্তসত্তা হয় তাহলেই সম্ভব জিনিয়াকে সাধারণ মানুষ করে রাখার আর একবার এমনটা হয়ে গেলে জিনিয়া আর কখনোই পরীলোকে ফিরতে পাড়বে না
তবে ওর সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে
কোনো এক আমাবস্যার রাতে,,
আমি ভাবতে লাগলাম যে ভাবেই হোক নিজেকে বাঁচাতে হলে আর জিনিয়াকে নিয়ের করে রাখতে হলে জিনিয়ার সাথে আমার শারীরিক সম্পর্ক করতেই হবে
চলবে………………………
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন