পরী (পর্ব - ২)


 আসলে হয়েছে কি আমাদের পরীদের যাকে বা যাদের ভালো লাগে আমরা তাকেই তুলে নিয়ে যায়

আর সারাজীবন পরীলোকে রেখে দেই./
আর সেখানে তোমার আর আমার জোড় তো আগে থেকেই ঠিক করা তোমাকেও পরীলোকে নিয়ে যাবো..
পরীর কাছে এমন কথা শুনে আমি হতবাক হয়ে গেছি..
আমি পরীলোকে যাবো..আব্বু আম্মুকে ছাড়া থাকতে পাড়বো না..
আমিঃআচ্ছা সব বুঝলাম কিন্তু তোমার নামটা জানা হলো না..
আমাদের পরীদের কোনো নির্দিষ্ট কোনো নাম রাখা হয় না..
আর আমি তো রাজকুমারী
আমার নাম নেই সবাই রাজকুমারী বলেই ডাকে.
কিন্তু তোমরা মানুষদের তো একেক জনেরর একেক নাম..
তুমি আমার একটা নাম দাও./
আমিঃআমি কি নাম দিবো?
আরে দাও
আমি;জিনিয়া নামটা আমার অনেক ভালো লাগে..
আমারো অনেক ভালো লেগেছে তুমি আমাকে জিনিয়া বলেই ডাকবে..
আমি;আচ্ছা ডাকবো..কিন্তু তুমি কি এখনি আমাকে তোমারর সাথে পরীলোকে নিয়ে যাবে?
জিনিয়াঃনাহ আগামী আমাবস্যা এররাতে তোমাকে আমার সাথে যেতে হবে.।
আমিঃআমাবস্যা আসতে আর করদিন বাকি?
জিনিয়াঃআর ১৩দিন বাকি..
আমিঃনাহ আমার ইচ্ছাটা তাহলে অপূর্ণ থেকে গেলো..
জিনিয়াঃতোমারর আবার কিসের ইচ্ছা?
আমিঃছোটকাল থেকে ইচ্ছা যারর সাথে আমি
জিনিয়াঃএই আমার যাবার সময় হয়ে গেছে
আমি চলে যাচ্ছি আগামীকাল রাতে আবার দেখা হবে..
জিনিয়া উঠে দাঁড়ালো..
তারপর ওর পেছন থেকে দুটো পাখা বেড়িয়ে আসলো..
আমি হা করে তাকিয়ে আছি জিনিয়ার দিকে..
সত্যি এতোদিন রূপ কথার গল্পে পরীদের নিয়ে পড়েছি কিন্তু বাস্তবে পরীরা এতো সুন্দর হয় তা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করলাম না..
জানালা লাগানো ছিলো কিন্তু একাই খুলে গেলো
জিনিয়া উড়ে চলে গেলো..
সাথে সাথে আমার রুম পুরো অন্ধকার হয়ে গেলো
এতোক্ষন আমি কি স্বপ্ন দেখছিলাম নাকি যা হলো সব বাস্তব
আর বাস্তুব হলে কি আমাকে সত্যি পরীলোকে যেতে হবে
নাহ আমি কিছুতেই পরীলোকে যাবো না
যে করেই হোক জিনিয়াকে আমাদের এখানেই রাখার ব্যাবস্থা করবো,,কিন্তু তার জন্য আগে জিনিয়াকে রাজি করাতে হবে,,আর সবার কাছ থেকে জিনিয়ার আসল পরিচয় আমাকে লুকাতে হবে,,আব্বু আম্মুকেও এই ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না,,বললেই
আব্বু আম্মু চিন্তা করবেন না হল দশজনকে জানিয়ে দিবেন,,আর এতে করে আমার পরিবারেরই বিপদ।।
আমি ঘুমিয়ে গেলাম..
পরদিন রাতের বেলা,,
আমি অনুভব করলাম কেও আমার পাশে বসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,,
আমি জেগে দেখি
জিনিয়া আমার সামনে বসে আছে..
আমিও উঠে বসলাম।
জিনিয়াঃকি হলো উঠে গেলে কেনো?
আমিঃআজকে আমাকে শূন্যে ভাসিয়ে রাখলে না কেনো?
জিনিয়াঃএখন তো আমার পরিচয় তুমি পেয়ে গেছ..তাই আর তোমাকে শূন্যে ভাসাই নি
আমিঃআচ্ছা একটা কথা বলবে?
জিনিয়াঃকি কথা জানতে চাচ্ছ তুমি?
আমিঃআমার শরীরে ক্ষত কি তুমি সৃষ্টি করতে?
জিনিয়াঃআমি ইচ্ছা করে সৃষ্টি করতাম না,,আসলে যখন আমরা কোনো মানুষের অজান্তে তাকে স্পর্শ করি তার শরীরে নিজে থেকেই ক্ষতেই সৃষ্টি হয়..
আমিঃকালকে তো আমাকে স্পর্শ করেছিলে তাহলে আমার শরীরে ক্ষত হলো না কেনো?এর আগে তো রোজ নতুন ক্ষত হতো..
জিনিয়াঃএকটু আগে আমি তোমাকে কি বললাম?
যে আমরা যখন কোনো মানুষের অজান্তে তার শরীরে স্পর্শ করি তখন তার শরীরে ক্ষত হয়,,কিন্তু কালকে তো তুমি জেনেই গেছ আমি কে?আর কেনো তোমাকে স্পর্শ করি..
আমিঃআচ্ছা তোমাদের পরীলোক কেমন দেখতে?
জিনিয়াঃকিছুদিন পর তো যাচ্ছই তখন না হয় দেখে নিও.
আমিঃআমার একটা ইচ্ছা ছিলো সেই ছোট বেলা থেকেই..
জিনিয়াঃকি ইচ্ছা বলো আমায়
আমি তোমার সব ইচ্ছা পূরণ করে দিবো.
আমিঃআমার ইচ্ছা এটাই যে আমার সাথে যার বিয়ে হবে তার সাথে আগে আমি প্রেম করবো তারপর তাকে বিয়ে করবো
জিনিয়াঃঅহহ এই ব্যাপার তাহলে আজ থেকে আমার সাথে প্রেম করা শুরু করে দাও।
আমিঃনা এটা কিভাবে হয়?
রাতের বেলা প্রেম করে কোনো মজা পাওয়া যায় না,,
এই তুমি দিনে আমার সাথে দেখা করতে পারবে না?
জিনিয়াঃদিনে দেখা করতে পারবো,,কিন্তু তার জন্য আমাকে পরীলোকে গিয়ে আমার পিতা মাতার অনুমতি আনতে হবে..কিন্তু আমার মনে হয়না তাড়া আমাকে সেই অনুমতি দিবে..
আমিঃপ্লিজ আমার এই ইচ্ছেটুকু পূরণ করো,,কিছুদিন পর তো আমি তোমার গ্রহে চলে যাবো..
কিন্তু যাবার আগে তুমি আমার সাথে আমাদের এখানে থাকবে
জিনিয়াঃআচ্ছা আমি কালকেই আমার পরীলোকে যাবো,,তারপর যে করেই হোক অনুমতি নিয়ে আসবোই..
আমিঃহুম আচ্ছা আমাদের কি বিয়ে করতে হবে?
জিনিয়াঃহ্যা পরীলোকের নিয়ম অনুযায়ী বিয়ে,,কিন্ত্য একটা কথা কি জানো?
আমিঃকি কথা?
জিনিয়াঃবিয়ের ৫বছর ৫মাস আমাদের মাঝে কোনো সম্পর্ক থাকবে না,,
আমিঃকেনো সম্পর্ক থাকবে না কেনো?
জিনিয়াঃকারণ তুমি মানব সন্তান তোমাকে পরীলোকে নিয়ে যাবার পর আমাদের মতো করে তুলতে হবে তারপর যখন তুমি আমাদের সমাজের হয়ে যাবে তখন তোমার সাথে আমার সম্পর্ক হবে এর আগে হলে আমাদের দুজনের জন্যই বিপদ..
আমি;আমি আব্বু আম্মুকে ছাড়া থাকবো কিভাবে?
জিনিয়াঃমাঝে মাঝে এসে দেখা করে যাবে,,
আমিঃনাহ সেটা হয় না,,তুমি আমাদের এখানে থেকে যাও..
জিনিয়াঃআমার পক্ষে কোনো দিন এই কাজ করা সম্ভব নয়..
বছরে একবার আমাদের পরীলোকে আসর বসে
যদি সেই আসরে আমি উপস্থিত থাকতে না পারি তাহলে আমি তার কয়েকদিন পরেই মারা যাবো./
আর আমার পিতা মাতা চাইবে না তাদের একমাত্র মেয়ে তাদের থেকে দূরে থাকুক
আমিঃতাহলে আমার আব্বু আম্মু কি করে চাইবে বলো
জিনিয়া আমার কথা শুনে এইবার রেগে গেলো..
এই তোমার সাথে ভালো ভাবে কথা বলছি বলে এই নই পরীরা কখনো রাগ করে না,,আমরা একবার রেগে গেলে কাছের মানুষকেও মেরে ফেলতে দ্বিতীয়বার ভাবি না।
আমিঃআমি মরতে রাজি আছি,,,কিন্ত্ আব্বু আম্মুকে ছাড়া থাকতে পারবো না
পরীঃতুমি মারা গেলে আমাকেও মরতে হবে
আমিঃকেনো তোমাকে মরতে হবে কেনো?
জিনিয়াঃকারন পরীরা তাদের সঙ্গী ছাড়া বাচতে পারে না,,যেমন ধরো আমার পিতা যদি আমার মাতার আগে মারা যায় তাহলে আমার মাতাকেও বিষ পান করে মরতে হবে,,তবে এই বিষ তোমাদের কাছে যে বিষ আছে তা না
এই বিষ এতই তীব্র যদি ১০০০হাত দূর থেকেও তোমারা এর ঘ্রান নাও সাথে সাথে মারা যাবে
আমিঃতাহলে কি করা যায়?
জিনিয়াঃআচ্ছা এক কাজ করা যায় তুমি বরং নিজেকে একটু গুছিয়ে নাও আর তোমার পিতা মাতাকে ছাড়া থাকার অভ্যাস করে নাও
আমি তোমার জন্য না হয় আরো দুই আমাবস্যা অপেক্ষা করবো
আমিঃআচ্ছা ধন্যবাদ তোমাকে
আরর আমি যা বলেছি তোমাকে কিন্তু করতেই হবে
জিনিয়াঃহুম যেভাবেই হোক আমি পিতা মাতার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আসবো
আমার যাবার সময় হয়ে গেছে আমি চলে যাচ্ছি কাল তোমার সাথে দেখা হবে না,,কারণ আমি পরীলোকে যাবো,,পরশু আসবো
জিনিয়া চলে গেলো..
বুঝলাম না ওদের মধ্যে এতো নিয়ম কানুন কেনো আছে,,
স্বামী মরলে স্ত্রীকে মরতে হবে
এটা কেমন নিয়ম
নাহ ভেবে লাভ নেই,,তবে আমি জিনিয়ার সাথে কোনো ভাবেই যাবো না দরকার হলে কালো মেয়ে বিয়ে করবো তবুও আব্বু আম্মুকে ছাড়া আমি কিছুতেই থাকবো না,,
পরদিন সকালে উঠে আমি অফিসে চলে গেলাম..
সব সময় মাথার মধ্যে চিন্তা থেকেই যায়..
আমি যদি যেতে না হয় পরীদের যে ক্ষমতা যদি আমার বা আমার পরিবারের সাথে কিছু করে বসে তাহলে কি হবে
পরদিন পরী আর আসেনি
তার মানে ও ওর পিতা মাতার সাথে দেখা করতে গেছে তারপরদিন আবারো পরী এসে হাজির
আমিঃকি হলো তোমাকে এতো খুশি লাগছে কেনো?
জিনিয়াঃখুশি হবো না
আমার পিতা মাতা আর আমি এখন থেকে কিছুদিন পৃথিবিতে থাকবো
আমিঃমানে তোমার পিতা মাতা কেনো থাকবে?
জিনিয়াঃআমি তা কিছু জানিনা তবে মনে হয় তাদের রাজকন্যার জামাই কেমন হবে তা ভালো করে বুঝতেই এখানে থাকবে
আমিঃআচ্ছা তোমারা সবাই থাকবে কোথায়
জিনিয়াঃতোমাদের বাসার সামনে কিছু খালি যায়গা ছিলো না সেখানে একটা বড় বাড়ি হয়ে গেছে
আমিঃধুর কি বলো আমি আজকে বিকালেও দেখে এসেছি যায়গাটা খালি..
জিনিয়াঃখালি ছিলো তবে আব্বু আম্মু বানিয়ে
নিয়েছে তাদের জাদু বলের মাধ্যেমে
আমিঃওয়েট তুমি পিতা মাতা বাদ দিয়ে আব্বু আমম্মু বলছো কেনো,,আর বাড়ি হয়েছে ভালো কিন্তু লোকজন দেখলে তো ভয় পাবে কারন একরাতে বাড়ি হয়ে গেলো এটা মানবে
জিনিয়াঃযেহেতু এখন থেকে এখানেই থাকবো তাই এখানকার ভাষাতেই কথা বলতে হবে,,আর তুমি চিন্তা করো না যেই অই বাড়ির দিকে তাকাবে তার মনে হবে এইই বাড়ি অনেক বছর আগে থেকেই এখানে আছে মায়া করে রেখেছি তাকালেই কাজ হয়ে যাবে
চলবে..„„„„………………


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মেঘে_ঢাকা_আকাশ - ০১

মেঘে_ঢাকা_আকাশ - ০২

মেঘে_ঢাকা_আকাশ - ০৩